আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী: গৌরবময় সাফল্যের স্বর্ণালী ইতিহাস

আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী: গৌরবময় সাফল্যের স্বর্ণালী ইতিহাস

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে। শাসকদল মুসলিম লীগ ছিল সাম্প্রদায়িক। ফলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিবেশও অনেকটা সাম্প্রদায়িক চেহারা পায়। এমনকি বিরোধী রাজনৈতিক ও ছাত্রসংগঠনেও পড়ে সাম্প্রদায়িকতার ছায়া।

কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের সচেতন তারুণ্য ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কৃত্রিম খোলসে মুখ ঢাকা রাখতে বেশিদিন রাজি থাকেনি। তাদের উদ্যোগে পঞ্চাশের দশকের মধ্যভাগে প্রথমে ছাত্রলীগ, পরে আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। পশ্চিম পাকিস্তানেও আওয়ামী লীগের শাখা গঠিত হয়। ফলে গোটা পাকিস্তানেই আওয়ামী লীগ একমাত্র বড় জাতীয় রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হয়। গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলের একই ভূ-খণ্ড নিয়ে গঠিত এই রাষ্ট্র দুটির একটি ‘পূর্ব পাকিস্তান’ অন্যটি ‘বাংলাদেশ’। এ কথা সর্বজনবিদিত যে, পাকিস্তান নামক ঔপনিবেশিক ধরনের কৃত্রিম রাষ্ট্রের নিগড়ে বাঁধা বাঙালি জাতি তার নিজস্ব একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে থেকে ভাষা-সংগ্রাম, স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকারের জন্য ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ভেতর দিয়ে একদিকে এই ভূ-খণ্ডে পাকিস্তানের কবর রচনা করে, অন্যদিকে বাঙালির নিজস্ব প্রথম জাতি-রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। এই সংগ্রাম ও যুদ্ধে বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব প্রদান করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন জনকল্যাণের ব্রত নিয়ে ঢাকার রোজ গার্ডেনে যে দলটির আত্মপ্রকাশ, দুই যুগেরও কম সময়ের ব্যবধানে, ১৯৭১ সালে সেই দলটির নেতৃত্বেই স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে জন্মকালে যে দলটির নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ, সেই দলটিই আজকের আওয়ামী লীগ। প্রথম কমিটিতে সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। সাধারণ সম্পাদক ছিলেন টাঙ্গাইলের শামসুল হক। যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন সে সময়ের তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে সে সময়ের কথা উল্লেখ আছে।

যখন ঢাকার রোজ গার্ডেনে দলের গোড়াপত্তন হচ্ছে, তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান তখন কারাগারে।

তরুণ শেখ মুজিব যে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের কথা ভেবেছিলেন, তা কার্যকর হতে খুব বেশিদিন লাগেনি। ১৯৪৯ সালে গঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ পরবর্তীকালে নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নেতৃত্ব দলকে একটি অসাম্প্রদায়িক দলে রূপান্তর করে। তখন এটি ছিল একটি সাহসী সিদ্ধান্ত।

১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই ডিসেম্বর শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক জনসভায় শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানকে “বাংলাদেশ” নামে নামকরণের ঘোষণা দেন।
১৯৫২ সালে ভাষা সংগ্রামের পথ বেয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়-আওয়ামী লীগের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গৌরবগাঁথা, বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক আত্ম প্রকাশ তৎকালীন পূর্ব বাংলা তথা পাকিস্তানের রাজনীতির দৃশ্যপট বদলের ও সূচনালগ্ন হিসেবে চিহ্নিত। আওয়ামী লীগের জন্ম ছিল পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক ধরনের শাসন শোষণ এবং মুসলিম লীগের সাম্প্রদায়িক-স্বৈরতান্ত্রিক রাজনীতির অবসানের অনিবার্যতার ফল।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় কেবল নয়, একটি আত্মমর্যাদাশীল অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলাই ছিল আওয়ামী লীগের অঙ্গীকার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এইচএম কামরুজ্জামান তাদের জীবন দিয়ে এসই অঙ্গীকারের মূল্য পরিশোধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির প্রতিশোধ গ্রহণের সেই ষড়যন্ত্র ৭৫’ এর ট্র্যাজিডি সৃষ্টি করে। তা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতির পিতার অঙ্গীকার ও স্বপ্ন জয়ের পথে অকুতোভয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন মধ্য আয়ের দেশ।

দীর্ঘ পথপরিক্রমায় অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে আসতে হয়েছে আওয়ামী লীগকে। আদর্শবাদী, উদারনৈতিক এই রাজনৈতিক দলটির অস্তিত্ব বিনাশের চেষ্টাও হয়েছে। দলের ভেতরের কোন্দলও অনেক সময় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চেয়েছে; কিন্তু আলোর পথযাত্রী আওয়ামী লীগ সব বাধা-বিপত্তি মাড়িয়ে এগিয়ে গেছে। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের এক বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশনে প্রবাসে নির্বাসিত জীবনযাপনকারী শেখ হাসিনাকে সর্বসম্মতভাবে দলের সভাপতি নির্বাচন করা হয়। সেই বছরের ১৭ মে শেখ হাসিনা দেশের এক ক্রান্তিকালে দেশে ফেরেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মাত্র ৩৪ বছর বয়সে ১৯৮১ সালে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে একটানা ৪৩ বছর দলটির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ১৯৯৬ সালে তাঁর নেতৃত্বে ২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের ম্যান্ডেট পায়। খুব কম দেশেই একটি দল ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে ক্ষমতায় ফিরতে সক্ষম হয়েছে। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮, ২০২৩ টানা চারবার জনগণের ম্যান্ডেট পায় আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগে মুজিব যুগই হচ্ছে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল যুগ। তিনি অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রচার করেন। ঘোষণা করেন পূর্ব পাকিস্তান নয়, এই ভূখণ্ডের নাম বাংলাদেশ। আমরা হাজার বছর ধারে বাঙালি। আমাদের পরিচয় হবে বাঙালি। বড় ঢেউ তোলে বাংলাদেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদ। বাঙালির যে হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তার মিল দেখা যায় অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সভ্যতার সঙ্গে। বাংলাদেশে সেই ঐতিহ্য ধারণ করেন শেখ মুজিব এবং সেই জাতীয়তার বাহক হয়ে দাঁড়ায় আওয়ামী লীগ।

মুজিব যুগের আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়। আওয়ামী লীগে বড় ধরনের রূপান্তর ঘটে।

বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন। দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন শোষিতের গণতন্ত্র। সেই অসাম্প্রদায়িক উন্নত বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি দেশের মানুষের সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোনো বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জাতির পিতার স্নেহধন্য, ত্যাগী ও নিবেদিত প্রাণ, ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক লীগের প্রাক্তন সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল জব্বার কে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি।

উপমহাদেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বলা চলে, এই দলটির ইতিহাসই হচ্ছে বাংলাদেশের গত ৭৫ বছরের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাস। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস যাঁরা পাঠ করবেন, তাঁদের জন্য বাংলাদেশের ইতিহাস পাঠ করা তেমন দরকার হবে না। জনগণের জন্য, জনগণ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই দলটির প্রতি এখনো জনগণের অবিচল আস্থা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দলটির অসাম্প্রদায়িক অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাক। ৭৫ বছর পূর্ণ করলেও আওয়ামী লীগ তার তারুণ্য হারায়নি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, যুগান্তরের লক্ষ্য ও কর্মসূচি এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই তিনটি রক্ষাকবচের জোরেই আওয়ামী লীগ নতুন প্রাণ পাবে। আওয়ামী লীগের ইতিহাস অপরাজেয়।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, শোষণমুক্ত সাম্যের সমাজ গঠনের আদর্শ এবং একটি উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক, প্রগতিশীল সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দর্শনের ভিত্তি রচনা করে আওয়ামী লীগ। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫৫ সালের কাউন্সিলে অসাম্প্রদায়িক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’।
আওয়ামী লীগ শুধু এ দেশের প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠনই নয়, বাংলাদেশের রাজনীতির মূলধারাও। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস একসূত্রে গাঁথা। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ভাষা সংগ্রামের পথ ধরে ৬৬ সালে ৬ দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করে বাঙালি জাতি। পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাসহ বাঙালি জাতির যা কিছু শ্রেষ্ঠ অর্জন, তার মূলে রয়েছে জনগণের এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব। জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস জনগণ এবং সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

৭৫ বছরের পথপরিক্রমায় দেশের বৃহত্তম ও প্রাচীন রাজনৈতিক দলটিকে অনেক চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর অনেকটা অস্তিত্ব সংকটে পড়ে দলটি। আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র করা হয়। দলের ভেতরেও শুরু হয় ভাঙন।

১৯৮১ সালে জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের হাল ধরেন শক্ত হাতে এবং তাঁর সাহসী নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয় এবং বারবার ঘুরে দাঁড়ায়।

গণতন্ত্র, ভাষা সংগ্রাম, স্বাধিকার আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়, মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর জাতীয় পুনর্গঠন, বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের মহাসড়কে উত্তরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ তথা উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করা, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা, নারীর ক্ষমতায়ন, সমুদ্র বিজয়, ল্যান্ড বাউন্ডারি…….. মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, খাদ্যে আত্মনির্ভরশীলতা, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২১ হাজার মেগাওয়াটের লক্ষ্য অর্জন, নিজস্ব অর্থে পদ্মাসেতু নির্মাণ, ঢাকা মেট্রোরেল, চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীতে সুড়ঙ্গ পথ নির্মাণ, পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, ঈশ্বরদীতে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ সফলভাবে কোভিড মহামারি মোকাবেলা ও দ্রুত সময়ে টিকাদান সম্পন্ন এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান অর্জন প্রভৃতি উল্লেখ করলেও আওয়ামী লীগের অর্জনের কথা শেষ হবে না এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।

বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগের জয়যাত্রা অব্যাহত থাকুক। আমরা শুধু একটি কথাই বলব, তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সুখে-দুঃখে, বিপদে আপদে সর্বদা দেশবাসীর পাশে আছে এবং থাকবে। অপ্রতিরোধ্য আওয়ামী লীগ কেবল অতীত বর্তমান নয়, বাংলাদেশের ভবিষ্যতের নির্মাতা। আওয়ামী লীগ চিরজীবী হোক।

লেখক- মোহাম্মদ আবু জাফর রাজু , প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২

দ্বন্দ্ব ভুলে বটবৃক্ষের ছায়াতলে মুরাদনগর আওয়ামী লীগ

দ্বন্দ্ব ভুলে বটবৃক্ষের ছায়াতলে মুরাদনগর আওয়ামী লীগ

কুমিল্লার মুরাদনগরে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব আর আধিপত্যের রেষারেষিতে দীর্ঘ দশ বছর দুই ভাগে বিভক্ত ছিল মুরাদনগর উপজেলার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলীয় পদ নিয়ে ছিল নানা বৈষম্য। ত্যাগীরা মূল্যায়ন পায়নি এমন অভিযোগও ছিল তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের।

কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ধীরে ধীরে পাল্টে যায় মুরাদনগরের চিত্র। কুমিল্লা-৩(মুরাদনগর) থেকে জাহাঙ্গীর আলম সরকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি নির্বাচিত হয়ে মাত্র ৪ মাসে দলীয় সকল ভেদাভেদ ও বৈষম্যকে দূরে রেখে ঢেলে সাজিয়েছেন মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগকে এক ছাতার নিচে আনতে বুকে টেনে নিচ্ছেন শত্রুমিত্র সবাইকে। সাবেক এমপির অনুসারীরা দলে দলে ছুটে যাচ্ছেন বর্তমান এই সাংসদের ছায়াতলে। তিনিও পূর্বের বৈরিতা ভুলে সাদরে গ্রহণ করছেন সকল নেতাকর্মীকে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১০ বছর যারা ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের লোক হিসেবে উপজেলায় পরিচিত ছিলেন এখন সবাই বর্তমান সাংসদ ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকারের অনুসারী। দীর্ঘদিন মুরাদনগর আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। যার কারণে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল রুগ্ণ। মুরাদনগরে আওয়ামী লীগের একটি অফিস পর্যন্ত ছিল না। বর্তমান এই সাংসদের সাংগঠনিক দক্ষতা ও গতিশীলতায় মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ এক ও অভিন্ন।

এ বিষয়ে কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সরকার জানান, বিগত ১০ বছর মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল অতি দুর্বল। বেশির ভাগই ছিল পকেট কমিটি। হাইব্রিডরা দলের নেতৃত্বে চলে আসায় অবমূল্যায়ন হয়েছে ত্যাগীদের। দুই ভাগের বিভক্তি ছিল আওয়ামী লীগে। রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ হতো একক সিদ্ধান্তে ও ঢাকার পাঁচতারকা ভবনে বসে। প্রকৃত ত্যাগী নেতা-কর্মীরা মূল্যায়ন পায়নি। প্রকৃত আওয়ামী লীগের কর্মীদের সাথে ছিল না ওই নেতার যোগাযোগ। বৈষম্য আর নানা ভাগে বিভক্ত ছিল তৃণমূল। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর দলের স্বার্থে ,মুরাদনগরের উন্নয়নের স্বার্থে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। যারা নির্বাচনে আমার বিরোধিতা করেছেন তাদের সাদরে গ্রহণ করছি। কারণ দিনশেষে তারাও জাতির পিতার আদর্শের সৈনিক, আওয়ামী লীগের সৈনিক। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি অহিংস সবুজ তিলোত্তমা মুরাদনগর গড়তে চেষ্টা করছি। 

অপরদিকে সাবেক এমপির একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে মুরাদনগর আসা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। তৃণমূল নেতাদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন না। কোন দলীয় ও জাতীয় অনুষ্ঠানে তাকে পাওয়া যায় না। নির্বাচনের পর মহান মাতৃভাষা দিবস ও স্বাধীনতা দিবস ২৬ শে মার্চে তাঁকে মুরাদনগরে আসতে দেখা যায়নি। নেতাকর্মীদের বিশ্বাস ছিল ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে তার অনুসারীদের পাশে থাকবেন। কিন্তু চিত্র উলটো। সাবেক এমপি এই মুহূর্তে মাঠ ছেঁড়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত। কর্মীরা তাকে না পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের হাল ধরতে বর্তমান সাংসদ জাহাঙ্গীর আলম সরকারের উপরই ভরসা রাখছেন।

দলের দুর্দিনে যারা নৌকার পক্ষে কাজ করেছে, সাবেক সংসদ সদস্যের জন্য রাজপথে লড়াই করেছে সবাইকে বঞ্চিত করেছিলেন ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন। বিনিময়ে কাছে টেনেছিলেন জামাত-বিএনপির সময়ে লুটতরাজ করা মানুষগুলোকে। তিনি নেতাকর্মীদের বিপদে পাশে থাকেন না। নেতাকর্মীরা দলের জন্য খেটে মরে, তার মৃত্যু পরবর্তী জানাজায় যদি দলের নেতৃত্ব দানকারী ব্যক্তিকে না পাওয়া যায়, মারা গেলে যদি মোবাইলে ফোন দিয়ে সমবেদনা না জানানো হয় তাহলে এমন ব্যক্তির নেতৃত্বের প্রয়োজন নেই বলে মনে করছেন তারা। নেতৃত্ব প্রদানে দক্ষ জাহাঙ্গীর আলম সরকার কারণ তিনি তৃণমূল হতে উঠে আসা ত্যাগী নেতা। তৃণমূলের কর্মীদের দুঃখ কষ্ট তার কানে ভাসে সাইরেনের মতো। আওয়ামী লীগের প্রয়োজনে তার জীবনের সোনালি যৌবন ত্যাগ করেছেন। সাবেক সাংসদের ন্যায় কোনো পাঁচতারকা ভবনে বসে ব্যবসা ও রাজনীতিকে একই মাপকাঠিতে বিচার করেন নি জাহাঙ্গীর আলম সরকার। তাই নেতৃত্ব প্রদানে জাহাঙ্গীর আলমের মতো দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তির বিকল্প চিন্তা করা আকাশকুসুম ভাবনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি’র বিজয়ের লক্ষ্যে চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ

আওয়ামী লীগ সভাপতি’র বিজয়ের লক্ষ্যে চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ

চাটখিল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দোয়াত কলম প্রতিকে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির টানা তৃতীয়বারের মত নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন জানান, নির্বাচনে প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার পর উপজেলা আওয়ামী লীগ পরিবারের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামে নির্বাচনে দলীয় প্যানেল ঘোষণা দেয় হয়।

এতে দলীয় ভাবে চেয়ারম্যান পদে জাহাঙ্গীর কবির (দোয়াত কলম), ভাইস চেয়ারম্যান পদে এইচ.এম আলী তাহের (উড়ো জাহাজ) ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রোজিনা আক্তার (কলস) প্রতীক কে সর্মথন দিয়ে তাদের বিজয়ের লক্ষ্যে পাড়া-মহল্লায় ভোটারদের কাছে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সকল সংগঠনের নেতারা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দলীয় প্যানেল কে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে ভোটারদের আহ্বান জানান। তবে দলীয় প্যানেলে থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন এইচ.এম আলী তাহের। 

শুক্রবার (১৭ মে) সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, জাহাঙ্গীর কবির দুই মেয়াদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন কালে কোন ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার সৃষ্টি হয়নি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে তেমন কোন অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ না থাকায় ভোটাররা তার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে। জাহাঙ্গীর কবিরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ছাত্র লাীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা জেড. এম আজাদ খান। তবে তিনি গুটি কয়েকটি কেন্দ্রে নির্বাচনী কেন্দ্র কমিটি দিলেও সিংহভাগ কেন্দ্রে কোন কমিটি দিতে পারেননি। এতে তার ভোটের লড়াইয়ে শক্ত অবস্থান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

অপরদিকে এইচ.এম আলী তাহেরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চাটখিল পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র আহসান হাবীব সমীর (তালা) ও চাটখিল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাবেক পরিচালক মো. সামছুল আলম (চশমা) প্রতীকে ভোটের মাঠে রয়েছেন। তারা উভয়েই দিন-রাত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মীকে নিয়ে নিজের পক্ষে গণসংযোগ করে আসছেন।

এছাড়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রোজিনা আক্তার (কলস) প্রতিকে বর্তমানে ভোটের মাঠে একক রয়েছেন। তার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে কাগজে- কলমে উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি শামীমা আক্তার মেরী (ফুটবল) প্রতিকে থাকলেও তিনি ভোটের মাঠে নিষ্ক্রিয়। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনেও শামীমা আক্তার মেরী নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক দলীয় প্যানেল ঘোষণার পর শামীমা আক্তার মেরী নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে যান।  

চাটখিলে আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা জনসভায় রূপ

চাটখিলে আওয়ামীলীগের মতবিনিময় সভা জনসভায় রূপ

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পর্কিত এক মতবিনিময় সভা জনসভায় রূপ নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে উপজেলার মোহাম্মদপুর জনতা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও জনসাধারন উপস্থিতি ও অংশগ্রহন ছিল চোখে পড়ার মত। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কবির।  

মতবিনিময় সভায় বক্তরা সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, শেখ হাসিনার উন্নয়নে জনগণ সন্তুষ্ট বলেই দলীয় মতবিনিময় সভায় আজ সর্বসাধারণের উপস্থিতিতে ও অংশগ্রহনে জনসভায় রূপ নিয়েছে।

সভায় বক্তব্য রাখেন চাটখিল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তরুণ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম, সাবেক দপ্তর সম্পাদক আহসান হাবীব সমীর, পৌর আওয়ীমীলীগের সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুমন চৌধুরী, মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন (পূর্বাঞ্চল) যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন শিপন প্রমুখ।

সভায় উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মী আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আবারো চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কবিরের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি ব্যতিত সরকারের উন্নয়ন ঘরে-ঘরে পৌঁছানো যাবে না। তাই তাকে আবারো উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করার শপথ করে উপস্থিত সকলে।  

এখনো সময় আছে ট্রাক থেকে নেমে নৌকায় উঠুন

এখনো সময় আছে ট্রাক থেকে নেমে নৌকায় উঠুন

ট্রাক মার্কা প্রতিকের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটনের প্রতি সমালোচনা করে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, চারিদিকে যখন নৌকার জয়জয়কার তখন নৌকা বিরোধী প্রার্থী হয়ে এবং দেশের উন্নয়নের ধারা রুখতে গোপনে ও প্রকাশ্যে পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি মুখে বলছেন আমি নৌকা করি আবার সেই নৌকার বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে ট্রাক মার্কা নিয়ে এসে বলছেন আমাকে ভোট দেন।
এখনো সময় আছে ট্রাক থেকে নেমে নৌকায় উঠুন। না হলে ৭ তারিখ নির্বাচনের পর ট্রাকের চাকায় হাওয়া থাকবেনা।

আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকালে শার্শার বাগআঁচড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আয়োজনে ও সন্ধ্যায় নিজামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আয়োজিত দুটি বিশাল নির্বাচনী জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, শার্শার মাটিতে নৌকা বিজয়ের জোয়ার উঠেছে। এই জোয়ার বুঝিয়ে দিচ্ছে আগামী ৭ তারিখের নির্বাচনে বিপুল ভোটের মাধ্যমে শার্শার জনগণ নৌকাকে বিজয়ী করবে। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে আওয়ামী বিরোধী যত চক্রান্ত আছে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

এসময় দুটি জনসভায় প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ৮৫, যশোর-শার্শা আসনের নৌকা মার্কার সংসদ সদস্য প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিন।

নৌকা মার্কার দুটি জনসভায় শেখ আফিল উদ্দিন বলেন, আজ নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার নির্বাচন পূর্ববর্তী জনসভা যেভাবে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে তাতে করে শার্শার জনগণ বুঝিয়ে দিয়েছে নৌকাকে বিজয়ী করতে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে।

আমি অনুরোধ করবো আপনারা আমাকে যেভাবে আশ্বস্ত করেছেন সেভাবে আজ থেকে নির্বাচনের দিন ফলাফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত আপনারা মাঠে ময়দানে দিনরাত পরিশ্রম করুণ। কোন ভাবেই যেন নৌকা বিরোধীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।

নৌকা বিরোধীরা ছদ্মবেশ ধরে ভোটের মাঠে আসতে পারে। তারা আসলেই মনে করবেন নাশকতা করতে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা দিয়েছে। আমাকে আপনাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে।

এসময় শেখ আফিল উদ্দিনের দুটি নির্বাচনী জনসভায় শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ যশোর জেলা শাখার সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য জনাব নাজমুল হাসান, শার্শা উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মেহেদী হাসান সহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

চাটখিলে আওয়ামীলীগ প্রার্থী সহ যৌথ সংবাদ সম্মেলন

চাটখিলে আওয়ামীলীগ প্রার্থী সহ যৌথ সংবাদ সম্মেলন

চাটখিল অডিটোরিয়ামে মঙ্গলবার বিকেলে নোয়াখালী-১ (চাটখিল ও সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী এইচ.এম ইব্রাহিম ও স্বতন্ত্র মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনের করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে এইচ.এম ইব্রাহিম এমপি নৌকার সমর্থনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এবং এই আসনে আওয়ামীলীগ সহ এর সহযোগী সকল সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে যৌথভাবে একযোগে কাজ করার ঘোষণা দেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে ছাড় দেওয়ার ঘোষণায় তিনি মনোনয়ন দাখিল করেছেন। পরবর্তীতে নেত্রীর নিদের্শেই তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নৌকার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। এছাড়া তিনি আরো বলেন, আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে এইচ.এম ইব্রাহিম দলীয় মনোনয়ন চাইবেন না এবং তাকে দলীয় মনোনয়ন পেতে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে নোয়াখালী জেলায় ও চাটখিল উপজেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও দুই উপজেলার আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নোয়াখালীতে ঢিলেঢালা হরতাল : গ্রেফতার-৮৪; হরতালের বিরুদ্ধে  আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল

নোয়াখালীতে ঢিলেঢালা হরতাল : গ্রেফতার-৮৪; হরতালের বিরুদ্ধে  আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল

দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল নোয়াখালীতে ঢিলেঢালা ভাবে পালিত হয়েছে। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার রাতে সেনবাগ উপজেলার সেবারহাট বাজার এলাকায় একটি ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। রোববার সকালের দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলায় হরতালের সমর্থনে বিএনপির নেতাকর্মিরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। সকাল ৮টার দিকে সোনাইমুড়ী উপজেলার একটি সড়কে গাছের গুডি পেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করে হরতাল সমর্থকরা। দুপুরে জেলা শহর মাইজদীর শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের সামনের সড়কে ১৫-২০জন বিএনপির নেতাকর্মি হরতালের সমর্থনে ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল করে। একপর্যায়ে তারা সেখানে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।  

এরআগে  হরতাল ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। বিক্ষোভ মিছিল শেষে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।  সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, নোয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু প্রমূখ।    

এদিকে হরতালে নাশকতার আশঙ্কায় পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে শনিবার রাতে জামায়াত-বিএনপি সন্দেহে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ৮৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের ঐ অভিযান  সদর উপজেলা থেকে ৭ জন, হাতিয়া থেকে ১ জন কোম্পানীগঞ্জ থেকে ৬জন , বেগমগঞ্জ থেকে ১৭জন , সেনবাগ থেকে ১৪জন ,চাটখিল থেকে ৪জন, সোনাইমুড়ী থেকে ২১ জন , সুবর্ণচর থেকে ৬ জন ও জেলা গোয়ান্দো পুলিশ (ডিবি) ৮জন সহ মোট ৮৪জনকে গ্রেফতার করে।