নোয়াখালীতে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নোয়াখালীতে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নোয়াখালীতে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার শাহাপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোরশেদ আলম স্বপন ক্রমেই স্বেচ্ছাচারিতায় বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। স্কুল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় তার প্রভাব যেন বেড়ে গেছে কয়েকশত গুণ। একদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক, অপর দিকে তিনি স্থানীয়। ফলে তিনি ধরা কে সরা জ্ঞান মনে করেন। স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এমনকি অভিভাবকরা তার কাছে লাঞ্চিত-অপমানিত হতে হয়। স্কুলের আশপাশের ব্যবসায়ীরাও তার কাছে জিম্মি।
 
স্কুলের ৮ম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীকে বেধম পিটিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করার ঘটনায় শিক্ষার্থীর মা প্রধান শিক্ষক মোরশেদ আলম স্বপনের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে, তিনি ঐ শিক্ষার্থীর মাকে বেয়াদব বলে গালি দিয়ে অফিস থেকে হুমকি-ধামকি দিয়ে বের করে দেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে। শিক্ষার্থীদের দাবি প্রধান শিক্ষক মোরশেদ আলম স্বপন কে অপসারণ না করা হলে তারা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করবে।
 
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে প্রধান শিক্ষক মোরশেদ আলম স্বপনের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে, তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে সরেজমিনে গিয়ে স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা বললে, সকলে এক বাক্য দাবি তোলে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চাই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীদের মারধর করা সরকারি ভাবে বিধি-নিষেধ থাকলেও প্রধান শিক্ষক ঐ বিধি-নিষেধের কোন তোয়াক্কা করেন না। তিনি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে একই আচরণ করেন। অভিভাবকরা জানান, যেখানে কিশোর গ্যাং ও মাদকে ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে কিশোর-কিশোরীরা। সরকার মাদকের ছোবল থেকে কিশোর-কিশোরীদের ফিরাতে নানামূখী উদ্যোগ গ্রহন করছে। তারমধ্যে অন্যতম একটি সুস্থ বিনোদন খেলাধুলা। অথচ স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্কুল ছুটির পর স্কুলের প্রধান গেইট বন্ধ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের কে খেলাধুলা করতে দেয় না। এবিষয়ে তার কাছে অভিভাবকেরা জানতে চাইলে তিনি অভিভাবকদের কে বাড়িতে মাঠ তৈরি করে ছেলে-মেয়েদের খেলার ব্যবস্থা করতে বলেন।

অপরদিকে স্কুলের পিছনে হিন্দু সম্প্রদায় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। অথচ এই হিন্দু সম্প্রদায়ের পূর্ব পুরুষ সুধন্য কুমার দাস বিদ্যালয়ের জন্য ৪২ শতক ভূমি দানপত্র দলিলের মাধ্যমে দান করে গেছেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক আজ তার প্রজন্মের চলাচলের পথ বন্ধ করে অবরুদ্ধ করে রাখছেন প্রায় ২০/২৫টি পরিবার কে। অপর দিকে সুধন্য কুমার দাসের নাতবৌ এই বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক। তিনিও ঐ পরিবার গুলোর মত করে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

পরে বিদ্যালয়ের সভাপতি শেখ ফরিদের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে, তিনি প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতার কথা স্বীকার করে, তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

নোয়াখালী প্রতিনিধি: 

Website: